আমরা অশিক্ষিত হয়ে পড়ছি না তো!

সবকিছু স্বাভাবিকভাবেই চলছিল, প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীই নিজের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু হঠাত্ করেই পুরো পৃথিবীকে গ্রাস করল করোনা মহামারী! পৃথিবীর সবকিছুই বদলে গেল, কি হওয়ার কথা ছিল আর কি হল। পৃথিবীর সকল মানুষই এই মহামারীর ক্ষতির কিছু অংশ হলেও টের পেয়েছে। তবে মহামারীর কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যারা তাদের একদল হলো ভবিষ্যত প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা! সময়টা ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাস, আমাদের দেশের মানুষ শুনেছিল চীনের উহান শহরে করোনা নামের একটি ভাইরাস বের হয়েছে! তখন তারা নিশ্চয়ই এই ব্যাপার নিয়ে বেশি ভাবেনি। কিন্তু এই ভাইরাস যে তাদের এত বড় ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিবে তা পুরো পৃথিবীর মানুষও কখনো কল্পনা করেনি! এই মহামারী পুরো পৃথিবীর জন্য একটি অভিশাপ। করোনা মহামারী প্রকটরুপ ধারণ করায় ২০২০ সালের মার্চ মাসে আমাদের দেশে  স্কুল-কলেজ সব বন্ধ করে দেয়! বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ভেবেছিল আর কিছুদিন পর স্কুল খুলে দিবে।  কিন্তু কে জানে যে এই বন্ধের পর আর দেড় বছরও স্কুল খুলবে না! দেখুন তো, যাদের ক্লাস ৫ এ মানে পিএসসি তে অটোপাস দিয়েছে এই শিক্ষার্থীরা কি শিখল? তাদের তো কিছুই পড়া হলো না! তাঁরা হাই স্কুলে উঠে জটিল অংক গুলো কিছুই বুঝবে না। তারপর আসুন, যাদের ক্লাস 8 এ মানে জিএসসি তে অটোপাস দিয়েছে তাঁরা কি পড়ল? জিএসসি পরিক্ষার কারণে শিক্ষার্থীরা পরিক্ষার আগে সবচেয়ে বেশি লেখাপড়া করে। কিন্তু যাদের জিএসসিতে অটোপাস দিয়েছে তাদের কি সেই পড়াটা হলো? হয় নি। এখন বাকি আছে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী। আমরা শিক্ষকদের থেকে শুনেছিলাম এসএসসি রেজাল্ট ই নির্ধারণ করে কোন শিক্ষার্থী বড় হয়ে কি করবে।কারণ এসএসসি রেজাল্ট ভালো হলে সে একাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়। কিন্তু এসএসসিতে যদি অটোপাস দেয়, তাহলে তারা বুঝবে কি করে যে তারা একদশ শ্রেণীতে কোন বিভাগ নিয়ে লেখাপড়া করবে! তাছাড়াও এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের যদি অটোপাস দেওয়া হয় তাহলে তারা ভবিষ্যতে কোন চাকরির ইন্টারভিউতে গেলে সবার  আগে বাদ পড়ে যাবে, কারণ ইন্টারভিউতে তার সার্টিফিকেটে যখন দেখবে যে সে এসএসসি বা এইচএসসি তে অটোপাস করেছে তখন তাঁরা বুঝবে যে সে ওই একবছর কোনো লেখাপড়া করেনি। এজন্য সে ভবিষ্যতে  অনেক পিছিয়ে পড়বে! করোনা মহামারী সত্যিই শিক্ষার্থীদের অনেক ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা বর্তমানে  অনলাইন গেমসগুলোর প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগ দিয়েছে। যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে আমাদের  আগামী ভবিষ্যত প্রজন্ম চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে! তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, সরকারের উচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো খুলে দেওয়া। পরিশেষে সকল শিক্ষার্থীদের কাছেই আমার  অনুরোধ অনলাইন গেমসের প্রতি মনোযোগ না দিয়ে নিজের লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগ দেওয়াটাই হবে সবচেয়ে ভালো!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নতুন মন্তব্যগুলি মঞ্জুরিপ্রাপ্ত নয়৷*

নবীনতর পূর্বতন